সরবরাহকারী বা প্রস্তুতকারক থেকে পাইকারী বিক্রেতা বা খুচরা বিক্রেতা এবং অবশেষে শেষ ভোক্তার কাছে পণ্যের তত্ত্বাবধান করতে ব্যবহৃত প্রক্রিয়াটি বিতরণ ব্যবস্থাপনা। এটি একটি অত্যধিক প্রচলিত বিক্রয় পদ্ধতি যা প্যাকেজিং, ইনভেন্টরি, গুদামজাতকরণ, সাপ্লাই চেইন এবং লজিস্টিকসের মতো অসংখ্য ক্রিয়াকলাপ এবং প্রক্রিয়াগুলির সমন্বয়ে গঠিত। ডিস্ট্রিবিউশন ম্যানেজমেন্ট ডিস্ট্রিবিউটর এর জন্য ব্যবসার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ব্যবসার লাভের পরিমাণ নির্ভর করে কত দ্রুত তারা তাদের মালামাল গ্রহন ও বিক্রি করে। তারা যত বেশি বিক্রি করবে, তত বেশি উপার্জন করবে, যার অর্থ ব্যবসার জন্য একটি ভাল ভবিষ্যত। ব্যবসার প্রতিযোগীতা বজায় রাখার জন্য এবং গ্রাহকদের খুশি রাখার জন্য একটি সফল বিতরণ ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা থাকাও গুরুত্বপূর্ণ। বিতরণ ব্যবস্থাপনা একটি কোম্পানির সফলভাবে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করার এবং লাভজনকভাবে পরিচালনা করার ক্ষমতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। একটি কোম্পানি কত বড় তা একটি কোম্পানির সরবরাহ পয়েন্টের সংখ্যার সাথেও সংশ্লিষ্ঠ। আধুনিক ডিস্ট্রিবিউশন ম্যানেজমেন্ট এ থেকে বি পয়েন্টে পণ্যগুলিকে স্থানান্তরিত করার চেয়ে আরও বেশি কিছুকে অন্তর্ভুক্ত করে। এতে তথ্য সংগ্রহ এবং এনালাইসিস ও জড়িত। মুনাফা বজায় রাখার পাশাপাশি, একটি কোম্পানি একটি বিতরণ ব্যবস্থাপনা কৌশল ব্যবহার করতে চাইতে পারে এমন অনেক কারণ রয়েছে। প্রথমত, এটি অনেক বিষয়কে সংগঠিত রাখে। যদি সঠিক ব্যবস্থাপনা না থাকে, খুচরা বিক্রেতাদের তাদের নিজস্ব অবস্থানে স্টক রাখতে বাধ্য করা হবে -এটি অনেক ক্ষেত্রেই অসম্ভব বিশেষ করে যদি বিক্রেতার সঠিক স্টোরেজ স্পেস না থাকে। একটি ডিস্ট্রিবিউশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ভোক্তাদের জন্য পণ্যগুলিকে সহজ করে তোলে। যদি সঠিক সিস্টেমটি বিদ্যমান না থাকে, তাহলে ভোক্তাদের তাদের যা প্রয়োজন তা পেতে একাধিক অবস্থানে যেতে হবে। বর্তমানে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বিতরণ পরিচালনার কৌশল আরও সহজ পণ্য বিক্রয়কে বাড়িয়ে তুলতে সহায়তা করেছে। কার্যকরী বন্টন ব্যবস্থাপনার মধ্যে কোম্পানীর পণ্য বিক্রি করা জড়িত এবং চ্যানেলে পর্যাপ্ত স্টক নিশ্চিত করার সময় সেই চ্যানেলে প্রচারনা বিভিন্ন প্রয়োজনীয়তাগুলি উপলব্ধ করে৷  প্রতিটি বিক্রয়ের মধ্যে রয়েছে একজন প্রাথমিক বিক্রেতা, যিনি পরিষেবা বা পণ্য সরবরাহ করেন এবং একজন ক্রেতা যিনি পরিষেবা বা পণ্য ক্রয় করেন।

  • সরাসরি বিতরণ: এই ধরনের বন্টন কৌশল ব্যবহার করে পণ্য নির্মাতা সরাসরি ভোক্তাদের কাছে বিক্রি করেন।

  • পরোক্ষ বিতরণ: পরোক্ষ বণ্টনে অন্তত একজন তৃতীয় পক্ষ জড়িত থাকে। এই ধরনের ডিস্ট্রিবিউশনের মধ্যে ডিস্ট্রিবিউটর অন্তর্ভুক্ত থাকে যারা উতপাদনকারীর কাছ থেকে পণ্য ক্রয় করে এবং তারপর খুচরা বিক্রেতাদের কাছে পুনরায় বিক্রি করে। 

  • উল্লম্ব (ভার্টিকাল) বিপণন ব্যবস্থা: এটি এমন একটি ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম যাতে ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম এর সকল লেয়ার (ম্যানুফেকচারার, ডিস্ট্রিবিউটর/হোল সেলার, রিটেইলার এই লেয়ার গুলো) একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য (একই লক্ষ্য) নিয়ে কাজ করে। এই লেয়ার গুলো হতে পারে একই মালিকানায় যেমন ওয়ালটন প্লাজা যেখানে রিটেইলার এবং মানুফেকচারার একই মালিকানায়, আবার হতে পারে ফ্যঞ্চাইজির মাধ্যমে যেমন সিপি, কে এফ সি। কনভেশনাল সিস্টেম এ লেয়ার গুলো ভিন্ন ভিন্ন গোল নিয়ে কাজ করার কারনে কখনো কখনো কনফ্লিক্ট হয় আর তা ঠেকাতেই মূলত ভার্টিকাল ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম এর উদ্ভাবন। 

  • অনুভূমিক (হরিজন্টাল) বিপণন ব্যবস্থাঃ এটি এমন একটি ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম যাতে দুটি ভিন্ন পন্য বা সার্ভিসের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান একই লক্ষে সমন্নিত হয়ে (integrated) কাজ করে। যেমন একটি সিম কোম্পানি এবং একটি ফোন কোম্পানীনি অনেকসময় একই ডিস্ট্রিবিউশন চানেল ব্যবহার করে যেখানে দুপক্ষের পন্য বা সেবা এক সাথে কনজিউমার ক্র‍য় করে।

  • নিউমেরিক ডিস্ট্রিবিউশনঃ  এটি এমন একটি ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম যাতে সকল কাস্টমার অর্থাৎ রিটেইল এ কমপক্ষে একটা SKU এর উপস্থিতি থাকা আবশ্যক। এ পদ্ধতিতে অধিক কাভারেজ কে গুরুত্ব দেয়া হয়।

  • ওয়েটেড ডিস্ট্রিবিউশনঃ এটি এমন একটি ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম যাতে সকল কাস্টমার (রিটেইল) কে টার্গেট না করে বরং ক্লাস্টার মার্কেটে একটি বা দুটি বড় আউটলেট এ সকল পন্যের  অধিক এবং সঠিক উপস্থিতি নিশ্চিত করা। এ পদ্ধতিতে অধিক রিটেইল  কাভারেজ কে গুরুত্ব না দিয়ে কত টাকার পন্য ঐ নির্দিষ্ট মার্কেটে ঢুকল তাতে গুরুত্ব দেয়া হয়। মোট কথা  নিউমেরিক হল কত বেশি দোকানে পন্য (পন্যের ভ্যালূ বিবেচ্য নয়)  আর ওয়েইটেড হল কত বেশি টাকার পন্য ঢুকল ( দোকান সংখ্যা বিবেচ্য নয়)।


মোঃ ফারুক হোসেন

Post a Comment

Previous Post Next Post