যে ৩ টি কারনে আমি আমার টিমকে পরিবার মনে করি
টিম শব্দটার ব্যাপ্তি বিশাল। বড় কোন কাজ যা একা করা যায়না সেটা কয়েকজন মিলে করতে হয়। এই কয়েকজন একসাথে মিলেই একটা টীম। বাহুবলী সিনেমাতে স্বর্ন প্রতিমাকে উত্তোলনের জন্য যারা রশিতে হাত লাগিয়েছিল তারা একটা টীম। কর্পোরেট জগতে ছোট ছোট টিম অনেক হয় তবে একটা ডিপার্টমেন্ট একটা বড় টীম। একটা টীমকে স্টেবল বলা যাবে তখনই যখন ঐ টীমের সবার চাওয়া এক হবে। আমি ছোট বড় অনেকগুলো টীম লিড দিয়েছি। আজকে আমি বলব, যে ৩ টি কারনে আমি আমার টিমকে পরিবার মনে করিঃ
⦾ নন ভার্বাল কমিউনিকেশনঃ কয়েকদিন হলো Communication Masterclass নামে একটা কোর্স করছি। কমিউনিকেশনের আদ্যোপ্রান্ত। আসলে কমিউনিকেশনের যতগুলো ফর্ম আছে তার মধ্যে নন ভার্বাল কমিউনিকেশন এর আলাদা একটা গুরুত্ব আছে। পৃথিবীর ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বড় এন্টারটেইনার যেমন চার্লি-চ্যাপলিন, মিস্টার বিন উনারা উনাদের কোন শোতে কোন শব্দ উচ্চারন করেননি। অসাধারন ওয়ে অফ কমিউনিকেশন। আমি নন ভার্বাল কমিউনিকেশন খুব পছন্দ করি। টিম নিয়ে সামনাসামনি বসতে আমার ভালো লাগে। একসাথে ঘুরতে যেতেও ভালো লাগে। আমি কাছ থেকে আমার টিমের এপিয়ারেন্স দেখি। ভাষা, ক্যাপাসিটি ইভেন কিভাবে কে হাটছে তাও দেখতে পারি। একসাথে ঘুরতে গেলে একেক জনকে একেক দায়িত্ব দিয়ে আমি দেখি, সে কি করে। কাছ থেকে টিমের একটা ফুট প্রিন্ট কিন্তু নেয়াই যায়। যা ফোনে কথা বলে কিংবা অনলাইন মিটিং করে আসলে বুঝা সম্ভব নয়। এই বিষয়গুলো আমাকে পরবর্তিতে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে।
⦾ আন্তরিকতাঃ কোন টিমে যদি আন্তরিকতা না থাকে সেটাকে টিম বলা মুশকিল। জুনিয়ররা যদি সিনিয়রদের প্রতি সন্মান প্রদর্শন না করে, কথাকে মূল্যায়ন না করে সেই টিম কখনই ভালো করতে পারবেনা। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে জুনিয়ররা অসহযোগিতা, অন্যায়, দুর্নীতির কারনে সিনিয়রদের প্রতি আস্থা হারিয়ে দিশেহারা হয়। হতাশার এক পর্যায়ে সিনিয়রদের প্রতি অসহযোগিতা প্রদর্শন শুরু করে। আলহামদুলিল্লাহ খুব অস্বাভাবিক ২/১ টা ইস্যু ছাড়া আমি আমার টিম নিয়ে এই বিষয়ে সন্তুষ্ট। আমার সন্মানকে তারা নিজেদের সন্মান মনে করে। কিছু কাজ তারা আমার জন্য করে, আমাকে খুশি করতে করে। যতটুকু জানি আমার প্রতিটা টিম মেম্বার আমাকে সবার সামনে সন্মানের সাথেই উপস্থাপন করে। একজন টিম লিডার হিসাবে আমি এটা এনজয় করি। প্রফেশনাল রিলেশনের বাইরেও আমাদের একটা সম্পর্ক আছে এটা আমার টিমের সবাই বিশ্বাস করে। আমি আমার টিম মেম্বারদের বেনিফিট, তাদের সমস্যা সহ অনেকসময় পারিবারিক বিষয়েও সহযোগিতা করি। টিমের কাউকে দিয়ে হচ্ছেনা এটা ঐ টিম মেম্বার নিজে যতক্ষন উপলব্ধি না করে ততক্ষন তাকে সংশোধনের জন্য আমি সময় দেই ।
⦾ একতাঃ টিম মেম্বাররা ঐক্যবদ্ধ থাকাটা খুব দরকার। টিমের মধ্যে যদি ভুল বুঝাবুঝি থাকে, তবে সামনে আগানো দুস্কর। যদিও টিমের এতগুলো মানুষকে সকল ইস্যুতে একমত পোষন করানো অনেক জটিল কিন্তু একটু চেস্টা করলে অনেকটাই সম্ভব। আমি যখন যে টিমকেই লিড দিয়েছি, শুরুতেই এই বিষয়টা নিয়ে কাজ করেছি। টিম মেম্বারদের মাঝে মাঝেই একসাথে বসার ব্যবস্থা করেছি। মিটিং এর বাইরে রিফ্রেশমেন্ট, রিসোর্ট, জন্মদিন, বিয়ে নানা উপলক্ষে আমরা এক হই। উপলক্ষ ছাড়াও বসে যাই কোন রেস্টুরেন্টে। আমি শুধু তাদেরকে এক করার চেস্টা করেই থেমে যাইনা। আমি স্পস্টভাবে সবাইকে বুঝিয়ে দেই যে নিজেদের মধ্যে রেশারেশি আমি পছন্দ করিনা। ভারতের বিশিষ্ঠ মোটিভেশনাল স্পিকার ড. বিবেক বৃন্দার একটা প্রেজেন্টেশনে শুনেছিলাম, সেলসে যা ইনভেস্ট করা হয় তার কয়েকগুন ফেরত পাওয়া যায়। যেমন একজন সেলসম্যান একটা সুন্দর জামা কিনল। এজন্য তার এপিয়ারেন্স চেঞ্জ হবে। গ্রহনযোগ্যতা বাড়বে। ফাইনালি সেলস বাড়বে। ভালো রিটার্নের আশায় আমিও সময়, শ্রম ও অর্থ ইনভেস্ট করি মাঝে মাঝে। আমরা নিজেরাই ম্যানেজমেন্টের অনুমতিক্রমে কক্সবাজার ঘুরতে গিয়েছি। সাজেক গিয়েছি। নিজেরা ভালো সময় কাটিয়েছি । আমি কিন্তু ক্ষতিগ্রস্থ হইনি। আমি দ্বিগুন হারেই রিটার্ন পেয়েছি।
মোঃ ফারুক হোসেন
আল্লাহর কাছে লাখো কোটি শুকরিয়া আপনার মত স্যার পেয়েছি ❤️❤️❤️
ReplyDeletePost a Comment